১০ বছরের সোহান। এসময় তার থাকার কথা স্কুলে। অথচ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে সে পড়ে আছে হাসপাতালের বেডে।
চিকিৎসকদের মতে, সে ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপুরা (Immune Thrombocytopenic Parpura) রোগে ভুগছে।
সোহানের বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুরের গোপালপুর গ্রামে। বাবা মারা গেছেন। মা পারভীন অভাব-অনটনের সংসার কোনোমতে টেনে নিচ্ছেন। মায়ের স্বপ্ন ছিল, কষ্ট করে হলেও ছেলে-মেয়েদের মানুষ করবেন। তবে একমাত্র ছেলের জটিল রোগ ধরা পড়ায় সহায়-সম্বলহীন মা এখন দিশেহারা।
সোহানের অসুস্থতার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সহযোগিতার আহ্বান করে অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। সেখান থেকে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জার নজরে আসে খবরটি। তিনি শিশুটির চিকিৎসায় সহযোগিতা দিতে এগিয়ে আসেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) পুনাক সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) থ্যালাসেমিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সোহানকে দেখতে যান। তিনি সোহানের সঙ্গে কথা বলেন এবং তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
এসময় পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমান সোহানের চিকিৎসার সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে পুনাক সভানেত্রীকে অবহিত করেন।
পুনাক সভানেত্রী বাংলাদেশ পুলিশ ও পুনাকের পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা তার মায়ের হাতে তুলে দেন। তিনি সোহানের জন্য খেলনা গাড়ি, বেলুন এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার নিয়ে যান।
পুনাক সভানেত্রীর মহানুভবতায় সোহানের মা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি পুনাক সভানেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এসময় জীশান মীর্জা সাংবাদিকদের বলেন, পুনাক সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য কাজ করছে। আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোহানের অসুস্থতার খবর পেয়ে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতন হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। তিনি থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
পরে তিনি থ্যালাসেমিয়া রোগের ওপর একটি ডকুমেন্টারি দেখেন এবং থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু ও তাদের অভিভাবকদের অভিজ্ঞতার কথা শোনেন।
এসময় পুনাকের স্বাস্থ্য সম্পাদিকা ডা. প্রথমা রহমান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত ডিআইজি রখফার সুলতানা খানম, এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।